শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
হোমজেলাঅব্যাহত হুমকিতে আতঙ্কিত বিজয়নগরের সপ্তডিঙ্গা সমিতির সদস্যরা

অব্যাহত হুমকিতে আতঙ্কিত বিজয়নগরের সপ্তডিঙ্গা সমিতির সদস্যরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক:

অব্যাহত হুমকিতে আতঙ্কিত বিজয়নগরের সপ্তডিঙ্গা সমিতির সদস্যরা।মেঘনা-নৈর্ঘন্দা জলমহালে মৎস্য আহরণ করতে পারছে না জেলে পরিবারগুলো।জলমহালে মাছ আহরণে বাঁধা দিয়ে অব্যাহত চাঁদা দাবী।ভয়ভীতি ও হুমকিতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সপ্তডিঙ্গা সমবায় সমিতির জেলে পরিবারগুলো। উপায়ান্তর না দেখে সমিতির পক্ষ থেকে ওই প্রভাবশালী মহলের কয়েকজনের নামোল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজয়নগর থানায় পৃথক পৃথকভাবে অভিযোগও করা হয়েছিল। কোনো কিছুতেই তোয়াক্কা না করা প্রভাবশালীরা আরও বেশি ক্ষিপ্ত-উত্তেজিত হয়ে উঠায় প্রাণহানি-ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শেষপর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন অসহায় জেলে পরিবারগুলোর সংগঠন সপ্তডিঙ্গা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাস বাদী এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের  আড়িয়ল গ্রামের মৃত মুতি মিয়ার ছেলে দানা মিয়া (৫০), সিরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক মিয়া (৩৬), মৃত লাল মিয়ার ছেলে কাজী জাকির হোসেন (৩৯), মৃত হাজী সুরুজ মিয়ার ছেলে শাহজাহান (৩৭) ও মৃত কাছু মিয়ার ছেলে ওহাব মিয়া (৩৫)কে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার কাগজপত্র ও স্থানীয় জনসাধারণ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সনের ২৮ জুন বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের তুলাতলা গ্রামে জেলে পরিবারের সম্মিলিত ‘সপ্তডিংগা সমবায় সমিতি লিঃ’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ১৪২৭-১৪২৯ বাংলা সনের ৩ বছর মেয়াদী উপজেলার বাকজোর কুলিয়ার খাল (মেঘনা-নৈর্ঘন্দা) জলমহালটি লীজ গ্রহণ করে। লীজ গ্রহণ করার সমিতির সদস্যরা নিয়মমত মৎস্য আহরণসহ তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। সম্প্রতি এ জলমহালে মৎস্য আহরণে বাধা দিয়ে দানা মিয়া গংরা ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা পরিশোধ করলে জেলে পরিবারগুলো আবারও মৎস্য শিকারে যেতে পারবে বলে তারা দম্ভভরে হুমকি দেয়। সমিতির সদস্যরা এই অন্যায্য দাবী পূরণে অনীহা জানানো এবং এসব বিষয়ে প্রতিকারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে জমা দেয়া অভিযোগে কোনো সুরাহা না হওয়ায় প্রভাবশালীরা আরও উদ্ব্যত হয়ে ওঠে। দলবল নিয়ে হুমকি প্রদর্শনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। দিন-রাতের বিভিন্ন সময়ে হুমকি পেতে পেতে ভীতসন্ত্রস্ত জেলে পরিবারগুলো। সর্বশেষ গেল মাসের ৩১ তারিখ মামলার বিবাদীরা ইছাপুরা ইউনিয়নের আড়িয়ল ব্রিজের দক্ষিণ দিকে নিত্য লাল দাসকে আটক করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় জোরপূর্বক ১০০ টাকার ৩টি জুডিসিয়াল খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ সময় মামলার বিবাদীরা নিত্যলাল দাসের পকেট থেকে নগদ টাকাসহ তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
প্রাণের উপর হামলা ও জীবনধারণের অনিশ্চয়তায় ভোগা নিরীহ জেলে পরিবারগুলোকে এ অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়  অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চলতি মাসের ৬ তারিখে সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাস মামলা দায়ের করেন। মামলায় দিন দিন তাদের অত্যাচারে ইছাপুরা ইউনিয়নের আতকুড়া গ্রামের সংখ্যালঘু জেলে পরিবারগুলো আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলে আদালতের কাছে প্রতিকারের আবেদন করেন।
মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাস বলেন, কিছু দাঙ্গাবাজ লোকদের হুমকি-ভয় ভীতিতে আমরা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছিনা। নিয়ম মোতাবেক জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে লীজ নেয়া জলমহালেও যেতে পারছি না।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মোহাম্মদ হাছান বলেন, বিলের বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মহোদয় ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সমাধানের চেষ্টা করছেন। আমরা বিষয়গুলোর উপর নজর রাখছি।

মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments