বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
হোমজেলাব্রাহ্মণবাড়িয়াআশুগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের গণসংবর্ধনা নিয়ে তোলপাড়

আশুগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের গণসংবর্ধনা নিয়ে তোলপাড়

গত শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জামায়াতের আমীর ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’ পেয়েছেন। আর এই সংবর্ধনার আয়োজক শরীফপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারী সংসদ সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের উম্মে ফাতেমা নাজমা আক্তার (শিউলী আজাদ)। ইউনিয়ন পরিষদের দেয়া এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এলাকায়। ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সংবর্ধিত হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক তাজুল ইসলাম শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর। তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওই সংবর্ধনা দেয়া হয়। শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তরুণ শিল্পপতি মো. বিল্লাল ভূইঁয়া। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া, এ.কে.এম ছাদির, মো. ছানাউল্লাহ, তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাফ মিয়া, ইউপি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নাছির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মানিক রায় ভৌমিক, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু মাস্টার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতার সাথে শরীফপুর ইউনিয়নের অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াতদের পরিবারের হাতে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় অনুষ্ঠানে। জানা যায়, এই ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ৭৪ জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩ জন।
স্থানীয়রা জানান, সংবর্ধনার আয়োজক শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েক বছর আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ্যে ছেঁড়ার অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামী হন। ওই মামলা থেকে বাচঁতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াত নেতাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার ঘটনা নিন্দনীয়। এ ঘটনায় সর্বত্র সমালোচনা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চেয়ারম্যান আমাদেরকে কিছু বলেননি। জনগনের তেমন কোন সম্পৃক্ততা ছিল না অনুষ্ঠানে। সেখানে তার পরিষদের কিছু সদস্য ও নিজেদের লোক নিয়েই মূলত অনুষ্ঠানটি করেছেন। আর এমপি শিউলি আজাদ এখানে এসেছেন, তিনিও আমাদের কিছু জানাননি। জনপ্রতিনিধিদের আচরণ এমন হওয়া উচিৎ নয়।
শরীফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা ফাইজুর রহমান তার ফেসবুকে এ ঘটনার সমালোচনা করে লিখেছেন- ‘নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াতের আমিরকে সংবর্ধনা। উনি (চেয়ারম্যান) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ছবি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়। পরে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মামলা শেষ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন বলেন, ‘ইউনিয়নের যে তালিকা তাতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাজুল ইসলামের নাম রয়েছে। ওনি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। তবে এখন রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় নন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের মাধ্যমে দাওয়াত দেয়া হয়।’

মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments