ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সির ভাই মো. জামাল মুন্সি (৫০) নিহতের ঘটনায় চরচারতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন খন্দকারসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা রজ্জু করা হয়েছে। নিহত জামাল মুন্সি উপজেলার চরচারতলা গ্রামের ফজলুল হক মুন্সির ছেলে ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সির ছোট ভাই। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে নিহত জামাল মুন্সির বড় ভাই জাহাঙ্গির মুন্সি বাদি হয়ে আশুগঞ্জ থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হলেন- আবু সহিদ, সেলিম মিয়া, জিয়াউদ্দিন খন্দকার, আবদু মিয়া, জাকির মিয়া (পিচ্ছি জাকির), পলাশ মিয়া, শফিকুল ইসলাম, তজুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, মো. আজিজ, রফিকুল খন্দকার, জুবায়ের ইসলাম, সাদ্দাম মিয়া, নাছির মিয়া, দিলু মিয়া, মাসুদ মিয়া, মাহবুবুর রহমান, মনা মিয়া ওরফে রমজান, পাবেল মিয়া, কাউছার মিয়া, খোকন মিয়া, রনি মিয়া, মো. রাব্বি, বাদল মিয়া, সোহেল মিয়া, সুমন মিয়া ও ইকরান। তাদের সকলের বাড়ি চরচারতলা এলাকায়। এছাড়া আরো ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন খন্দকারের যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে হামলা করে বাড়ির প্রধান ফটকে ভাংচুর করতে তাকে। এ সময় মামলার বাদি জাহাঙ্গির মুন্সি ও জামাল মুন্সি তাদের বাধা দিলে আবু সহিদ, সফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও মো. আজিজ নিহত জামাল মুন্সিকে ঝাপটে ধরে। এ সময় পলাশ মিয়া তার হাতে থাকা বল্লম দিয়ে জামাল মুন্সির বুকে আঘাত করে। এ সময় অন্যান্য আসামীরা আরো কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে জামাল মুন্সিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ব্যাপারে নিহত জামাল মুন্সির ভাই ও মামলার বাদি জাহাঙ্গির মুন্সি জানান, কোন কারণ ছাড়াই আমার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আবু শহিদ, সেলিম, আবদু, জিয়া খন্দকার, শফিক, দিলুর নেতৃত্বে তাদের লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। আমার ভাই জামাল মুন্সি তাদের হামলায় বাধা দিলে তাকে হত্যা করে হামলাকারীরা। আমি এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এই ব্যাপারে চরচারতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউদ্দিন খন্দকার বলেন, উল্লেখিত দ্বন্দ্ব ও হত্যাকান্ডের সাথে আমার দূরতম কোন সম্পর্কও নেই। ঘটনার খবর শুনে আমি সাথে সাথে আশুগঞ্জ থানাকে অবহিত করি। এবং একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করি। নিছক রাজনৈতিক কারণে এ ঘটনার সাথে আমাকে জড়ানো হয়েছে-যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, যে কোন হত্যাকান্ডই গর্হিত কাজ। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করবেন বলে প্রত্যাশা করি।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাহমুদ জানান, নিহত জামাল মুন্সির বড় ভাই জাহাঙ্গির মুন্সি বাদি হয়ে ২৭ জনের নামোল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতোমধ্যেই এজাহারে নামধারী ৫ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিদের আটক করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।