ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় একটি মিছিল শাহবাগস্থ জাতীয় যাদুঘরের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সংগঠনের সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলোর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জেসমিন আকতার, সাংগঠনিক সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টি, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়া সম্পাদক সুমাইয়া ঝরা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বর্তমানে এই কালো আইনের বেষ্টনীতে আবদ্ধ। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও দাবি আদায়ের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন করার নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে। বর্তমানে তা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে যা গণতন্ত্র পরিপন্থী। ফলে এই আইন সংশোধন নয়, বাতিল করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল বলেন, ‘কোন ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরতদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপকর্মের সমালোচনা করার অধিকার নাগরিকের রয়েছে। সেটা কোনভাবেই রাষ্ট্রদ্রোহ বা রাষ্ট্রবিরোধীতার মধ্যে পড়ে না। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মধ্যে পড়ে দেশের জাতীয় সংগীতকে ‘শিরক’ আখ্যায়িত করে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা হচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করে ইসলামী জলসায় হুমকি প্রদান করা, রাষ্ট্রবিরোধীতা হচ্ছে দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের ভাস্কর্যকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিতে চাওয়া। এসব অপরাধে যারা অপরাধী তাদের ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ দেখিনি। উপরন্তু দেখছি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বিরোধী লেখালেখিসহ যারা বিভিন্ন দপ্তরের ব্যর্থতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের সমালোচনা করছেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। দুর্নীতি, লুটপাট ও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতাকে গোপন ও পুলিশি ক্ষমতাকে সম্প্রসারিত করার এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।’
সমাবেশ শেষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আগামী ২০ মার্চ সারাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে মিছিল, সমাবেশের ঘোষণা দেন। এছাড়াও আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগেই এই কালো আইন বাতিল করা না হলে সাধারণ ছাত্র-শিক্ষক-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ- সভাপতি মনিরুজ্জামান বিবর্তন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক হিশাম খান ফয়সাল, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম মাইনুল ইসলাম সাগর, ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।