হেফাজতের হরতালে হামলা-ভাঙ্গচুরের শিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব পরিদর্শন করেছেন জাতীয় প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ খানের নেতৃত্বে ক্লাব নেতৃবৃন্দ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব পরিদর্শনের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে হামলার ঘটনা মেনে নেয়া যায় না, সাংবাদিক সমাজ চুপ করে বসে থাকতে পারেনা। এটি আমাদের সবার ওপরই আঘাত। ১৯৭১ সালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছিলো। তাতে সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ আহত হয়েছিলেন। এরপর আর কোন প্রেস ক্লাবে হামলার কথা শুনা যায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে হামলা খুব স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে নেয়ার কারন নেই। এর অনেক গভীরে যেতে হবে। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের পাশে আছি। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও তথ্য মন্ত্রনালয়েরও দায়িত্ব আছে। শুধু লেকচার দিলে চলবে না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের যেখানে যেখানে কথা বলা দরকার আমরা কথা বলবো। তিনি আরো বলেন, পুরো দেশের সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সাংবাদিক সমাজের মধ্যে বিভক্তি আছে বলেই দুস্কৃতিকারী-মৌলবাদীরা হামলার সাহস পায়। তারা মনে করে এদের ওপর হামলা করলেও কিছু হবে না। নাহলে সাংবাদিকরা কেনো টার্গেট হবে? কেনো সাংবাদিকদের গাড়ি পোড়াবে? আগে তো কখনো এমন ঘটেনি। পেশার কাজে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সাধারন সম্পাদক ইলিয়াছ খান বলেন, এটি একটি অশনী সংকেত।
জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিদলের কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হামলাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম। এ ছাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি তাঁর ওপর হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের হামলার ঘটনার বিবরণ দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের নেতারা বলেন, একাত্তর সালে জাতীয় প্রেসক্লাবে হামলার কথা তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কখনো প্রেসক্লাবে হামলা হয়নি। এবারই প্রথম এই জেলার প্রেসক্লাব আক্রান্ত হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো বক্তৃতা করেন যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ আলী, নির্বাহী সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া, সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ। প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী সদস্য রেজানুর রহমান,শাহনাজ বেগম পলি, শাহনাজ সিদ্দীক সোমা, সিনিয়র সদস্য জাহাঙ্গীর খান বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক জালাল আহমেদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, সদর ভূমি কার্যালয়, জেলা গণগ্রন্থাগারসহ ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি স্থাপনা পরিদর্শন করেন। গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।