ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোবারক উল্লাহসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও এক থেকে দেড়শ’ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইবুনালের এস কে এম তোফায়েল হাসানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এ ব্যাপরে বাদী পক্ষের আইনজীবি এইচ এম জিয়াউদ্দিন বিষটি নিশ্চিত করে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
এর আগে গত ১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় সাংসদ র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর দায়ের করা এজাহারটি জমা দিলেও দীর্ঘ দেড় মাসেও মামলাটি নথিভুক্ত হয় নি। এক পর্যায়ে তিনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টি উল্লেখ আলটিমেটাম প্রদান করার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ প্রশাসন এমপি’র মামলাটি সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন আসলে নথিভুক্ত করা হবে বলে জানায় পুলিশ। পরে তিনি চট্টগ্রাম আদালতে মামলার এজাহার জমা দিলে মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলার উল্লেখিত প্রধান দুই আসামি ছাড়াও অন্যান্যরা হলেন মাওলানা আশরাফুল হোসেন তপু, বোরহান উদ্দিন কাসেমি, মাওলানা আলী আজম, মাওলানা এরশাদ উল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ কাসেমি, মাওলানা নোমান আল হাবিব, মমিনুল হাসান তাজ, সুলেমান মোল্লা, মাওলানা এনামুল হক মাওলানা আব্দুল হাকিম, মাওলানা মনজুরুল হক ও খালেদ মোশাররফ। এছাড়া আরো ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত এক থেকে দেড়শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার বিবরণীতে জানা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। তারা সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র ও গান পাউডারসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে।
মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মুফতি মুবারক উল্লাহসহ অন্য আসামিদের নির্দেশে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, আইডি ও নিউজ পোর্টালে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক বিদ্বেষ ও ঘৃণামূলক স্ট্যাটাস দিয়ে জনসাধারণের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
শুধু তাই নয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা উপস্থিত থেকে ইলেকট্রনিক বিন্যাসের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা তথ্য সংগ্রহ করে তাদের বক্তব্য জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার নিজস্ব ফেসবুক পেজে প্রচার করে। এরই এক পর্যায়ে গত ৩১ মার্চ আসামিগণ তাদের ব্যবহৃত ফেসবুক পেজ জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য প্রদান করে বাদী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে ঘটনাকে ভিন্নদিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি ঘটনার দায়ভার তার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আসামিদের এ ধরনের বক্তব্য তাদের ডিজিটাল বিন্যাসের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশ ও প্রচার করেন তারা।
পাশাপাশি সমগ্র দেশে ও বহির্বিশ্বের সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে আমার (উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী) বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা চালায়। যা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা অনুযায়ী অপরাধ সংগঠিত করে। বিষয়টি আমাকে সাক্ষীরা অবগত করলে ঘটনার দ্বিতীয় তারিখ (২৭ মার্চ) ও সময়ে ঘটনাস্থলে আমি উক্ত বক্তব্য দেখে স্ক্রিনশট নিয়ে হার্ড কপি সংগ্রহ করি। এসব স্ক্রিনশর্ট মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী মামলাটি খারিজ হয়েছে বলে জানা গেছে ।