শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
হোমজেলাব্রাহ্মণবাড়িয়া৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস

৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস

৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্র“মুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী পাক বাহিনীর উপর বেপরোয়া আক্রমন চালাতে থাকে। ১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধে ২০ হানাদার নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ হানাদার নিহত হয় এবং শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। এরই মাঝে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্র“মুক্ত হয়ে পড়ে। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাকবাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।
এরপর থেকে চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্ট ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চতুর্দিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় পাক সেনারা পালিয়ে যাবার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাঁধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে। মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। একইদিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলাও শত্র“মুক্ত হয়।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ ভাষা চত্বরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও মুক্তিযোদ্ধা মিলন মেলা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বে-সামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।

মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments